নির্বাচন আসন্ন: ডিসেম্বর-মার্চের মধ্যে ভোট, বললেন ড. ইউনূস

চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কিনা, তা দলটির নিজস্ব সিদ্ধান্ত। নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের বলে জানান তিনি।
ড. ইউনূস স্বীকার করেন, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করা তার জন্য বিস্ময়কর ছিল। তবে দেশকে স্থিতিশীল করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অর্থনীতি পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।
শেখ হাসিনার নির্বাসন ও অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি
গত বছরের আগস্টে ছাত্র ও জনতার ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে চায়।
নির্বাচনের প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ড. ইউনূস জানিয়েছেন, তার সরকার ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করবে। সংস্কারের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনের চূড়ান্ত সময়।
তিনি বলেন, “যদি দ্রুত সংস্কার করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে। আর যদি সংস্কারের পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।”
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জ
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলে স্বীকার করেন ড. ইউনূস। তবে তিনি দাবি করেন, আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি পেয়েছি, যেটি ১৬ বছর ধরে ভয়াবহ ঝড়ে বিপর্যস্ত ছিল। এখন আমরা তা পুনর্গঠনের চেষ্টা করছি।”
এদিকে, শেখ হাসিনার অনুগতদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি তার সমর্থকদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে সরকার বলছে, আইন অনুযায়ী সবাই ন্যায়বিচার পাবে।
আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্য
যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে উন্নয়ন সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, “এটি ভালো হয়েছে। কারণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কাজ আমরাই করতে চেয়েছিলাম।”
তিনি আশ্বস্ত করেন, যেকোনো অর্থনৈতিক ঘাটতি পূরণে তার সরকার বিকল্প ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তনের এই অধ্যায় নজর কাড়ছে বিশ্ববাসীর। আসন্ন নির্বাচনের ফলাফলে নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ।
What's Your Reaction?






