হলুদ সাংবাদিকতা ও তথ্য সন্ত্রাস সাংবাদিকতার মর্যাদাকে ম্লান করে দিচ্ছে --- কাদের গনি চৌধুরী

Mar 20, 2025 - 22:30
Mar 20, 2025 - 22:30
 26
হলুদ সাংবাদিকতা ও তথ্য সন্ত্রাস সাংবাদিকতার মর্যাদাকে ম্লান করে দিচ্ছে                  --- কাদের গনি চৌধুরী

মাকসুদ আহমাদ রবিন : বিএফইউজে মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, হলুদ সাংবাদিকতা, অপতথ্য ও তথ্য সন্ত্রাস সাংবাদিতার মর্যাদাকে ম্লান করে দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায়ের পর এখন সুন্দর এবং চমৎকার পরিবেশ এসেছে। সাংবাদিকদের জাতির বিবেক বা ওয়াচডগ বলা হয়। আমরা সত্যটা লিখে পেশারমান বজায় রাখব। আমরা কারো পোষা কুকুর হব না।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে'র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার, মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর প্রফেসর জামাল উদ্দিন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী জাবেদ, সদর মেট্রো থানা জামায়াতের আমীর সালাউদ্দিন আইয়ুবী, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি শহিদুজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ।

কাদের গনি চৌধুরী আরো বলেন, প্রতিদিন দুইটি সূর্য উদিত হয়। একটি হচ্ছে প্রভাত সূর্য ,অন্যটি হচ্ছে সংবাদ। সূর্যের আলোতে আমরা দেখি আর সংবাদ মাধ্যম আমাদের বিশ্ব দেখায় বা জানায়। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় মানুষ গুম হয়েছে, সাংবাদিকরা লিখতে পারেনি। আয়না ঘরের কথা লিখতে পারেনি। বিদেশী গণমাধ্যম লিখেছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম লিখেনি। অথবা লিখতে পারেনি। যার কারণে গণমাধ্যম অনেকটা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। অথবা আস্থা অর্জনে চরমভাবে ব্যার্থ হয়েছে। এখন সাংবাদিকদের জন্য একটা সুন্দর সময়। আমরা এখন সত্যিকারের সাংবাদিকতা করব। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলব। মিথ্যাচারের ধারে কাছে আমরা যাব না। আংশিক নয়, পুরো সত্য লিখবো। এটা সত্য যে স্বাধীন গণমাধ্যমের পক্ষে দায়িত্বশীল কেবল সম্ভব। রাষ্ট্রের কাছে আবেদন থাকবে, পেশার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার বা রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সরকারী প্রতিষ্ঠানের নজরদারী করতে সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। কারণ এই জায়গাগুলোতে সবচেয়ে বেশী অনিয়ম দূর্ণীতি হয়। স্বাধীন গণমাধ্যমই কেবল পারে সত্য নিষ্ঠ খবর উপস্থাপম করতে। বাধা থাকলে তা সম্ভব নয়। 

তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখা জরুরী সত্যনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে যেমন স্বাধীনতার প্রয়োজন, তেমনি গণমাধ্যম আর সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভুমিকাও অপরিহার্য। যা খুশি তা লিখে দেওয়ার নাম সাংবাদিকতা নয়। দুইটি বিষয় সারা দুনিয়ার সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সামনে চলে এসেছে। একটি হচ্ছে ফেইক আরেকটি হচ্ছে থ্রেড। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য এই দুইটি বড় ধরনের বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। অর্থের প্রতি লোভ থাকলে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করা যায়না। ভয়কে জয় করার মত সাহস না থাকলে, পরিবেশ না থাকলে সাংবাদিকতার যে চ্যালেঞ্জগুলো তা মোকাবেলা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সাংবাদিকতা হতে হবে পুরোটা সত্য। আংশকি সত্য নয়। সত্য মিথ্যার সংমিশ্রনে নিউজ হয় না। যাচাই ছাড়া যা মনে হলে তা লিখে দেওয়া সাংবাদিকতা নয়। এটা বড়জোড় গল্প হতে পারে। গল্প আর সাংবাদিকতা এক জিনিস নয় এটা মফস্বল সাংবাদিকদের মনে রাখা জরুরী। কল্পনা করে কিছু লেখা যাবে না। এতে ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্রের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। গণমাধ্যম পারমানিক বোমার চেয়ে শক্তিশালী। আমি বলব ভুল সংবাদ পারমানবিক বোমার চেয়ে ভয়ংকর ক্ষতি করতে পারে। আমাদেরকে এই দিকটা বিবেচনা করতে হবে, যাতে কোন ভুল খবর না হয়। শুধু ফেইক নিউজের কারণে যুদ্ধ বাধানোর মত অনেক ঘটনা দুনিয়া জুড়ে হয়েছে। মনে রাখতে হবে যেখানে সত্য সেখানে সাংবাদিকতা, যেখানে কল্যান ও মঙ্গল সেখানে সাংবাদ হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow