ইরানে মার্কিন হামলার পর আকাশসীমা বন্ধ করল ইসরায়েল

ইরানে মার্কিন হামলার পর আকাশসীমা বন্ধ করল ইসরায়েল
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালানোর পর ইসরায়েল নিজের আকাশসীমা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ সিদ্ধান্ত এসেছে এমন সময়ে, যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং যুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল হয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েল–এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরাইলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কোনো বিমান দেশটির আকাশসীমায় প্রবেশ বা প্রস্থান করতে পারবে না।"
তবে স্থল সীমান্ত নিয়ে স্বস্তির কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মিসর ও জর্ডানের সঙ্গে ইসরায়েলের স্থলসীমান্ত এখনো স্বাভাবিকভাবেই চলমান রয়েছে।"
অন্যদিকে, এই হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম Truth Social–এ লিখেছেন, “আমরা ইরানের ফর্দো, নাতানজ এবং ইসফাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। বর্তমানে সব বিমান ইরানের আকাশসীমার বাইরে নিরাপদে অবস্থান করছে।”
ট্রাম্প আরও জানান, ইরানের ফর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে – যা মাটির প্রায় ২৬২ ফুট গভীরে অবস্থিত – সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ভারী বোমা ফেলেছে। হামলায় অংশ নেওয়া সব বিমান যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক পোস্টে বলেন, “ইরানে মার্কিন হামলায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ অঞ্চলের এই সংঘাত এখন এমন এক সীমায় পৌঁছেছে, যেখানে যেকোনো মুহূর্তে তা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ – বেসামরিক নাগরিক, পুরো অঞ্চল এবং বিশ্বব্যাপী শান্তির জন্য বিপদ ডেকে আনবে। এখনই সকল পক্ষকে কূটনীতির পথে ফিরতে হবে। এই মুহূর্তে কোনো সামরিক সমাধান নেই, একমাত্র উপায় হলো শান্তিপূর্ণ সংলাপ ও কূটনৈতিক উদ্যোগ।”
বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে এই উত্তেজনা বিশ্ব রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
What's Your Reaction?






