সীতাকুণ্ডে গৃহবধূ ফাতেমাকে পুড়িয়ে হত্যা, শাশুড়ি গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। ফাতেমা আক্তার নামের এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মুসলিম উদ্দিন ও শাশুড়ি সাজেদা বেগমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করলেও স্বামী পলাতক রয়েছে।
ফাতেমার বাড়ি মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন দক্ষিণ সোনা পাহাড় এলাকায়। দশ বছর আগে সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর বগাচতর গ্রামের মুসলিম উদ্দিনের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তিন সন্তান নিয়ে এই পরিবারে ফাতেমা দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১ জুন স্বামী মুসলিম উদ্দিন ফাতেমাকে মারধরের পর ঘরের মধ্যে আটকে রেখে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার। আগুনে দগ্ধ অবস্থায় ফাতেমাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ১৮ জুন বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর মুসলিম উদ্দিন শুরুতে দাবি করেন গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে, পরবর্তীতে তিনি বলেন স্ত্রী নিজেই আগুন লাগিয়েছেন। তবে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন, নিহতের বাবা নুরুল আবছার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শাশুড়ি সাজেদা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মূল অভিযুক্ত মুসলিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। শুক্রবার সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্ত মুসলিম উদ্দিনের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এছাড়া থানার সামনে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা।
এই নির্মম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা।
What's Your Reaction?






